রাজশাহী সংবাদদাতা : বাগমারার মচমৈল চকপাড়ায় কাদিয়ানি জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিলেন বহিরাগত। তার পরনে ছিল কালো জ্যাকেট। আর মুখ ঢাকা ছিল মাফলারে।
শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতি হামলাকারী। রক্তাক্ত আহ্তাবস্থায় পাঁচ মিনিট বেঁচেছিলেন ওই হামলাকারী। তবে মৃত্যুর আগে তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লি সান্তু রহমান জানান, হামলাকারী যুবকটি ছিলেন বহিরাগত। মসজিদে নামাজ পড়ার আগে স্থানীয়রা তার পরিচয় জানতে চাইলে যুবক জানিয়েছিলেন, মচমৈলে তার এক বন্ধু আছে। তার সঙ্গেই বেড়াতে এসেছেন। হামলাকারী নিজেকে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেন।
হামলায় মারাত্মক আহত দুই মুসল্লি ময়েজ উদ্দিন আর সাহেব আলী জানান, কালো জ্যাকেট ও মাফলারে মুখঢাকা হামলাকারী যুবকের দুই পাশে দাঁড়িয়ে তারা জুমার নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় যুবকটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় মসজিদের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে মারাত্মক আহত হওয়ার পরে মিনিট পাঁচেক যুবকটি জীবিত ছিলেন। তবে এসময় তার মুখ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি।
মুসল্লি ময়েজ উদ্দিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘জ্যাকেট পরা যুবকটি আমার পাশেই বসে নামাজ আদায় করছিলেন। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পরেই দেখি আমার তলপেট থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। পাশেই যুবকটির রক্তাক্ত দেহ। বিস্ফোরণের পরেই বন্ধ হয়ে যায় নামাজ। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
সাহেব আলী আরো জানান, জ্যাকেটের ভেতর লুকিয়ে রাখা ছিল বোমা। নামাজের সময় বিস্ফোরণ ঘটায় সে।
সূত্রমতে, বাগমারার মচমৈল চকপাড়া গ্রামটি প্রত্যন্ত পল্লীতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। এ এলাকায় বসবাস করে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের কিছু লোক। বোমা হামলার সময় মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন ২৫ থেকে ৩০ জন মুসল্লি।
আহত শিশু নয়ন
জুমার নামাজ আদায়কালে মচমৈল চকপাড়া কাদিয়ানি জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মসজিদের ভেতরেই মৃত্যু হয় হামলাকারীর। আহত হন মুসল্লি ময়েজ তালুকদার (৪০), সাহেব আলী (৩৫) ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র নয়ন (১২)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তারা মসজিদ এলাকা ঘিরে ফেলে। বর্তমানে মসজিদটি ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে।