স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বিজনেস প্রসেসিং আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতে কর্মসংস্থান এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাত থেকে রপ্তানি ৮০০ ডলার অতিক্রম করেছে। তথ্য প্রযুক্তিতে বিপিও খাতে কর্মসংস্থান দ্রুত বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তরুণদের এখন চাকরি নিয়ে ভাবতে হবে না। তথ্য প্রযুক্তি খাত তাদের বিপুল আয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে শেখাবে।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৮’ এর উদ্বোধন করে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ফেসবুক হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে ফেকবুক। এটি কাল্পনিক জগৎ, এর কোন সীমা নেই এবং এটা নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব নয়। উস্কানি বন্ধ এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েসন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং এর সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ বক্তব্য রাখেন ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েসন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং যৌথভাবে দু’দিনের বিপিও সামিটের আয়োজন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিপিও সামিটের উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের এ খাতের অবস্থানকে তুলে ধরা। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে এই খাতে মাত্র ৩০০ কর্মী ছিল, এখন তা ৪০ হাজারের উপরে অবস্থান করছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এ খাতে এক লাখ কর্মসংস্থান হবে। তিনি আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তি খাত থেকে ১০ বছর আগে বছরে আড়াই কোটি ডলারের সমান রপ্তানি করতো। এখন সেটা ৮০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে। শুধু আউটসোর্সিং থেকে আয় হচ্ছে ৩০ কোটি ডলারের বেশি। এখন বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে বিশ্বে যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, যুবসমাজের চাকরির জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন নেই। বর্তমান সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও দিক-নির্দেশনার কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছ। মফস্বল শহরে বসে ছেলে মেয়েরা এখন আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার আয় করছে। জেলা ও উপজেলায় বিদ্যুতের নিশ্চয়তা ও উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ায় এটা সম্ভব হচ্ছে। দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাত বর্তমান সরকারের আমলে কম সময়ে অনেক বেশী অগ্রগতি অর্জন করার কারনেই এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশ এখন বাংলাদেশ থেকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে সহায়তা চায়।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, এখন অনেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছেন। কিন্তু বর্তমানে অপপ্রচারের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ফেসবুকে অপপ্রচার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা দুনিয়াতেই হচ্ছে। এখন এটাকে ফেসবুক না বলে বরং ফেকবুক বলা যায়। এটা একটা কাল্পনিক, মিথ্যা জগৎ। এর কোনো সীমা নেই। এটা নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব নয়। ব্লক করাও সম্ভব নয়। ইন্টারনেটে কোনো কিছু ব্লক করে আটকানো যায় না। দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যেসব কনটেন্টের মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয় সেগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করে কিভাবে এর কনটেন্টগুলো ব্লক করা যায় তার জন্য প্রশিক্ষণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন,তরুণদের দাবি মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কোটা পদ্ধতি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে সরকার তরুণদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।