স্টাফ রিপোর্টার : দেশে চলমান নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের সাথে জড়িত সকল ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ, জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বর। শুক্রবার সকাল থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জনসমাগম ঘটতে থাকে। প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের অন্তত হাজারখানেক মানুষ সকাল থেকেই প্রতিবাদে গলা মেলাচ্ছেন। এসময় আন্দোলনকারীদের হাতে বিভিন্ন ধরণের ব্যানার দেখা যায়, তাদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘আমার বোন আজ ধর্ষিতা মানুষ তুমি চুপ কেন?’, ‘ধর্ষকদের বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন কর’, ‘ধর্ষণকারীর ফাঁসি চাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর এই বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘চলো যাই যুদ্ধে ধর্ষণের বিরুদ্ধে’, ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্য ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে’, ‘স্টপ রেপ নাউ’, ‘ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি প্রকাশ্যে ফাঁসি’, ‘ঘরে বাহিরে নারীরা থাকুক নিরাপদে’, ‘স্টপ রেপ’ এবং ‘হোক প্রতিবাদ হোক প্রতিরোধ সর্বত্র/ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ’।
ওদিকে শাহবাগে দেশে চলমান ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মহাসমাবেশ ডেকেছে দেশের বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। দেশে অব্যাহত ধর্ষণ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এই সমাবেশের ডাক দেয় তারা।
সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সর্বত্র। শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণ, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার তীব্র দাবি উঠেছে সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও জনগণের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে এক বক্তা বলেন, সরকারি মন্ত্রীরা বলেন ইউরোপ আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে নারী নির্যাতন কম হয়। অব্যাহত ধর্ষণ চলাকালেই মন্ত্রীরা এসব কথা বলেন। অথচ দেশে ৩ বছরের শিশুকন্যা থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা, কেউ ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন মানুষ বেশি এসব ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারছে। দেশে শতকরা ৮০টি ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায় না। বাকি ২০টি ধর্ষণের মধ্যে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায় ১০টি। তার মধ্যে শতকরা ৫টি ক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি হয়।
এসময় বক্তারা অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং অতি সত্বর বিচারের দাবি জানান।