অনলাইন ডেস্ক দ্রুত করোনা ভাইরাসের টিকার অনুমোদন দেয়া হলেও বড় এক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির পরও এর ধাক্কা বা আফটারশকের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে লড়াই করতে হবে পৃথিবীবাসীকে। করোনা ভাইরাস মহামারি বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের এ যাবতকালের প্রথম অধিবেশনে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এ সময় তিনি এই ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে দ্রুত যে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তবে সতর্কতা দেন যে, করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কার হলেও এর ক্ষত পৃথিবী থেকে সহসাই শেষ হয়ে যাবে না। তিনি বলেন, আমরা যেন বোকা না হই। এই ভাইরাস সংক্রমণের কারণে যে ক্ষত হয়েছে তা চলতে থাকবে বছরের পর বছর, এমন কি কয়েক দশক।
এই ক্ষত শুধু একটি টিকা সারিয়ে তুলতে পারবে না। চরম দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা নিকটতম হচ্ছে। আট দশকের মধ্যে আমরা বিশ্বে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছি। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসে সারাবিশ্বে মারা গেছেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।
অ্যান্তনিও গুতেরাঁ বলেন, কোভিড-১৯ আরো নানা রকম চ্যালেঞ্জকে বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অসমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন।
এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের শতাধিক দেশের নেতা বা সিনিয়র কর্মকর্তারা। সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশনের বক্তব্য আগে থেকেই রেকর্ড করা। দু’দিন চলবে এই সম্মেলন। তবে কূটনীতিকরা বিশ্বাস করেন, মাত্র দু’দিনের এমন আলোচনা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
সম্মেলনে গুতেরাঁ পুনর্বার আহ্বান জানান করোনার টিকাকে বৈশ্বিক সব মানুষের জন্য বিবেচনা করার। এক্ষেত্রে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা থেকে ৪৩০ কোটি ডলার এখনও পিছিয়ে আছে। এ জন্য আগামী দু’মাসের মধ্যে এই অর্থ দানের জন্য তিনি দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। এরই মধ্যে কোভ্যাক্স নামের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগে যোগ দিয়েছে কমপক্ষে ১৮০টি দেশ। তারা যৌথভাবে টিকা তৈরি করে তা সবার মাঝে সমতার ভিত্তিতে বিতরণ করতে চায়। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম যুক্তরাষ্ট্র। তারা করোনার টিকা নিয়ে সামনের সারিতে এগিয়ে আছে। আর সেখানে বিদায় নেয়ার পথে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন মার্কিনিদের সবার আগে টিকা দিতে।
অন্যদিকে রাশিয়া নিজেরা টিকা তৈরি করেছে। তবে তাদের টিকা নিয়ে রয়েছে সংশয়। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ট্রাম্প। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের হয়ে কাজ করছে বলে তার অভিযোগ। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে পারফরমেন্স দেখাচ্ছে তার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন গুতেরাঁ।