স্টাফ রিপোর্টার : হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী মারা গেছেন কয়েকমাস হলো। তবে মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কে হচ্ছেন হেফাজতের পরবর্তী প্রধান কর্তা, তার কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। আবার এই নেতৃত্ব নির্বাচনকে ঘিরে দলটিতে বিভক্তি দেখা দিতে পারে, এমনটিও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে জুনায়েদ বাবুনগরীই হেফাজতের পরবর্তী আমির হচ্ছেন। কিন্তু নেতৃত্ব নির্বাচনের সম্মেলন থেকে দৃশ্যত বাদ পড়ছেন প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানী এবং তার অনুসারীরা। তারা এ সম্মেলনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে হেফাজত নেতাদের একাংশ এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলছেন, সারা দেশ থেকে নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে বর্তমান সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী-এর। আর সম্মেলন পরিচালনা করবেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
ওদিকে এ সম্মেলনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন এক হেফাজত নেতা মাঈনউদ্দিন রুহী। তিনি আবার আনাস মাদানীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তার দাবি, কোন কমিটিতে আলোচনা ছাড়া ব্যক্তির রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের কারণে অবৈধভাবে এই সম্মেলন করা হচ্ছে। যেদিন হেফাজত গঠন হয়েছে, সেদিন থেকেই আমি এর যুগ্ম মহাসচিব। হেফাজতের কাউন্সিল করার জন্য এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটিতে কোন আালোচনা বা কোন মিটিং কখনও করা হয়নি। এটা একজন ব্যক্তির আমির হওয়ার জন্য এবং রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ হাসিল করার জন্য এই কাউন্সিল করা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তবে তার বক্তব্য সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছেন হেফাজতের আরেক নেতা সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামবাদী। তিনি বলেন, বৈধভাবে সম্মেলন ডেকে তারপরই নতুন নেতা নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা অভিযোগ করে, তারা আসলে হেফাজতের এই উত্থান সম্পর্কে জনগণকে বা আমাদের কর্মীদের বিভ্রান্ত করে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য চেষ্টা করছে। যাদের ব্যাপারে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ, তাদেরকে তো হেফাজতের কমিটিতে রাখার সুযোগ নাই।
সাত বছর আগে রাজনীতির দৃশ্যপটে আসা অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম নানা সময়ে আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘ দিন থেকে আল্লামা আহমদ শফী ছিলেন সংগঠনটির একক নেতা। এক পর্যায়ে এই বর্ষীয়ান নেতা মৃত্যুবরণ করলে হেফাজতের নেতৃত্ব সংকট দেখা দেয়। তার মৃত্যুর পর থেকেই কে হচ্ছেন দলটির পরবর্তী আমির তা নিয়ে আলোচনা জল্পনার শেষ নেই। এখন তো হেফাজত ঐক্যবদ্ধ থাকছে নাকি ভেঙে যাবে, সে সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে শেষ পর্যন্ত সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে নাটকীয় কিছু ঘটে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।