অনলাইন ডেস্ক : ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অথবা সরকারি জমি, দুই ক্ষেত্রেই দখলের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম। সম্প্রতি ফতুল্লার সোনারগাঁ উপজেলায় হাজী সেলিমের মদিনা গ্রুপের দখলে থাকা ১৪ বিঘা সরকারি জমি উদ্ধারের খবর এখনও পুরোনো হয়ে যায়নি।
এবার তার দখলের রাজত্বে নতুন বেরিয়ে এসেছে ফতুল্লা থানাধীন পাগলা পিলকুনি এলাকার এক নিরীহ বৃদ্ধ ব্যবসায়ীর জমি দখলের জন্য পানিবন্দি করে রাখার মত কাহিনী। ওই বৃদ্ধ ব্যবসায়ীর জমি দখলের উদ্দেশ্যে গত ৪ বছর ধরে বালু দিয়ে বাঁধ তৈরি করে পানিবন্দি করে রাখা হয়েছে পরিবারটিকে।
তবে এরইমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষে হাজী সেলিমের প্রতাপশালীতার বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে ওই পানিবন্দি পরিবারটি। তবুও তাদের যেন শঙ্কা কাটছেই না।
সরেজমিন জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে পিলকুনি এলাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন। তার অভিযোগ, এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ শতাংশ জমি হাজী সেলিম তার নামে খতিয়ানভুক্ত করে নেন টাকার জোরে। লাগিয়ে দেন বিশাল সাইনবোর্ড। বহুবার ধরনা দেয়ার পরও হাজী সেলিমের মন গলাতে পারেননি সাখাওয়াত। এমনকি যে দলিলের জোরে হাজী সেলিম জমিটি দখল করেছিলেন, সেটিও দেখানো হয়নি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেনকে। এরপর অনেকটা বাধ্য হয়ে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ফতুল্লা ভূমি অফিসে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে বিবিধ মোকদ্দমা (মিস কেইস) করেন সাখাওয়াত হোসেন।
তবে মামলা করেও যেন শান্তি পাননি সাখাওয়াত। তার জমির পানি নিষ্কাশনের পথরোধ করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। কার্যত দ্বীপের বাসিন্দা হিসেবে জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের।
সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, হাজী সেলিম আমাগো পানি দিয়া বন্দি কইরা রাখছে। অসুস্থ স্বামীরে নিয়া এই পানির মধ্যে আছি। হাজী সেলিম আমাগো জায়গা নিতে চায়।
এদিকে ২০১৬ সালে করা মামলায় জয় হয়েছে সাখাওয়াত হোসেনের। পানি থেকে মুক্তি না পেলেও হাজী সেলিমের দখল থেকে মুক্ত হয়েছেন এ কথা বলা যায়।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুর রহমান জানান, মিস কেস মামলাটি কয়েক বছর ধরে চলছিল। সেই মোকদ্দমায় হাজী সেলিমকে কয়েকবার হাজির হতে নোটিশ দেয়া হয়। হাজী সেলিম হাজির হননি, লোক পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার ওই বিবিধ মোকাদ্দমা নিষ্পত্তির শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে হাজী সেলিমের লোকজন এসেছিলেন। তারা আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও গ্রহণ করা হয়নি। আমরা মামলাটি পর্যালোচনাসহ নথি যাচাই-বাছাই করে সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে রায় দিয়েছি।