স্পোর্টস ডেস্ক : আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর এক মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু তার মৃত্যুর রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। ফুটবল বিশ্বের অধিবাসীরা এখনও যেমন তার মৃত্যুতে শোক ভুলে উঠতে পারছেন না, তেমনি তার মৃত্যু নিয়ে জল্পনা কল্পনার, সমালোচনারও কোনো শেষ নেই।
ম্যারাডোনার চিকিৎসায় কি কোনো অবহেলা করা হয়েছে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন ম্যারাডোনারই মেয়েরা। আর ম্যারাডোনার দেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর বিতর্কটা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। আজ আর্জেন্টিনার সরকারি কৌঁসুলি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছেন।
ম্যারাডোনা মাদকাসক্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগে করা সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষাতেও তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু মৃত্যুর পর তার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বলছে, শেষনিশ্বাস ফেলার আগে ম্যারাডোনার শরীরে কোনো মাদকের অস্তিত্ব ছিলনা।
এমনকি অ্যালকোহলের অস্তিত্বও ধরা পড়েনি। প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, হৃদরোগে ভুগে ম্যারাডোনা ঘুমের মধ্যে মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আরও ধরা পড়েছে, ম্যারাডোনার হৃদযন্ত্রের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। তার ফুসফুস, কিডনি ও যকৃৎ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
নতুন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে প্রকাশিত সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, মৃত্যুর আগে কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ভীষণ যন্ত্রণায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা। এই যন্ত্রণা বহাল ছিল তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগ পর্যন্ত। তার শরীরে যেসব ওষুধের অস্তিত্ব মিলেছে, এর সবই খিঁচুনি, পেটের সমস্যা, মাদকাসক্তিসহ মানসিক সব সমস্যার জন্য। কিন্তু ফুসফুস, কিডনি কিংবা যকৃতের চিকিৎসার জন্য কোনো ওষুধের অস্তিত্ব মেলেনি।
ওদিকে, ম্যারাডোনার দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুক এবং মনোবিদ অগাস্তিনা কোসাচভ এখনও তদন্তের অধীনে রয়েছেন। গত নভেম্বরের শুরুর দিকে ম্যারাডোনার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত একটি অপারেশন করানো হয়। তখন থেকেই কোসাচভ, লুকের সঙ্গে কাজ করছিলেন। এর কিছুদিন পর মারা যান সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। সংবাদমাধ্যম জানায়, ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৌঁসুলিরা।