অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আজ আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকার ইউরেনিয়াম জব্দ করেছে র্যাব। বিপুল পরিমাণ ইউরেনিয়াম উদ্ধারের সময় অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তারও করে তারা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা র্যাবকে জানায়, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধভাবে ইউরেনিয়াম ক্রয় করে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা ইউরেনিয়াম ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন।
এর আগে, ২০১৪ সালে রাজধানী ঢাকায় তেজস্ক্রিয় মৌলের বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেবার তাদের কাছ থেকে ২ পাউন্ড ইউরেনিয়াম জব্দ করা হয়েছিল।
কী কাজে লাগে ইউরেনিয়াম? এ প্রশ্নের উত্তরে শুরুতে বলতে হয়, ইউরেনিয়াম এই পৃথিবীর সবচেয়ে দামি পদার্থ। ইউরেনিয়াম মূলত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এক কেজি ইউরেনিয়াম জ্বালানি থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়, তা ৪৫০০ টন উচ্চ মানের কয়লা থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ শক্তির সমান বলে গণ্য করা হয়।
ইউরেনিয়াম একটি তেজস্ক্রিয় ধাতু ও উচ্চ ঘনত্বের মৌল, যা ১৭৮৯ সালে বিজ্ঞানী মার্টিন হাইনরিখ ক্লাপরথ ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেছিলেন। ধারণা করা হয় যে, তখনকার সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা ছিল ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কার এবং তিনি তখন এই ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারেই তার আবিষ্কৃত মৌলের নাম রেখেছিলেন ইউরেনিয়াম। ১৮৯৬ সালে বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল সর্বপ্রথম ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন।
বর্তমানে বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি রাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাজাখিস্তান, নিজার এবং নামিবিয়া বাণিজ্যিকভাবে ইউরেনিয়াম উত্তোলন করে থাকে।
অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোহাম্মদ আহসান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘সাধারণত নির্দিষ্ট মানের ইউরেনিয়াম অস্ত্র তৈরিতে কাজে লাগে। তবে সে জন্য অনেক অবকাঠামোর দরকার হয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কালোবাজারে ইউরেনিয়াম কেনাবেচার চেষ্টা করা হয়।’
ঢাকায় প্রাপ্ত ইউরেনিয়াম সম্পর্কে র্যাব জানিয়েছে, পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। রামপুরা থেকে উদ্ধার হওয়া ইউরেনিয়াম ঠিক কোন মানের, এটি কার্যকরী কিছু কিনা এ সম্পর্কে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।