অনলাইন ডেস্ক : রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে ঐক্যমতে পৌঁছেছে বাংলাদেশ, চীন এবং মিয়ানমার। মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের পর এই প্রথম তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় ভাব দেখিয়েছে মিয়ানমার।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে মঙ্গলবার বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে ত্রিপক্ষীয় ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নমনীয় অবস্থান দেখায় দেশটি।
ত্রিদেশীয় এই বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কাজ দ্রুত শুরু করার প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। দ্রুত এ সংকট সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে তিনটি দেশই একমত পোষণ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের দেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্বিচারে দমন-পীড়ন শুরু করে। এতে করে বাধ্য হয়ে লাখ লাখা রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের অভিযানের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে; তাদের নাম, পরিচয় ও রাখাইন রাজ্যের কোন এলাকা থেকে এসেছে তার বিস্তারিত বিবরণসহ বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে।
সেই নিবন্ধন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেই তালিকা থেকে মিয়ানমার মাত্র ২৮ হাজার রোহিঙ্গাদের ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। কিন্তু এখনও তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না- তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার অভাব দেখা দিয়েছে। এ কারণে দুই দফায় ফেরত পাঠানোর আয়োজন করা হলেও রোহিঙ্গাদের কেউ রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে চাননি। তারপর কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যায়। তার ওপর মিয়ানমারে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সব মিলিয়ে করোনা ও নির্বাচনের অজুহাত দেখিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার গতি ধীর করছে।